লিচু ফেটে যাওয়া রোধে করণীয়

লিচু ফেটে যাওয়া রোগটি মারাত্মক। বাংলাদেশে চাষ হওয়া লিচুর জাতগুলোর মধ্যে বোম্বাই লিচুতে ফেটে যাওয়া রোগের আক্রমণ বেশি দেখা যায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ব্যাপক তারতম্য, সঙ্গে গরম আবহাওয়ার পর হঠাৎ পর্যাপ্ত সেচ বা বৃষ্টিপাত লিচু ফাটার অন্যতম কারণ।

এছাড়া লিচু পাকার আগে উচ্চ তাপমাত্রা, নিম্নমাত্রার আপেক্ষিক আর্দ্রতাসহ দীর্ঘ বৃষ্টিপাত লিচু ফাটার অন্যতম কারণ। হরমোনজনিত, পুষ্টিজনিত এবং পোকার আক্রমণ ও আঘাতজনিত কারণেও লিচু ফেটে যেতে পারে। আগাম পাকে এমন জাতের লিচু ফাটার পরিমাণ নাবি জাতের তুলনায় বেশি।

অনেক সময় চাষিরা লিচু ফাটার প্রকৃত কারণ নির্ণয় করতে পারেন না। সেজন্য এককভাবে কোনো চেষ্টার ওপর নির্ভর না করে ওপরের সমস্যাগুলোর সমন্বিত ব্যবস্থা নিলে কার্যকরভাবে লিচুর ফাটা রোধ করা সম্ভব হবে।

লিচু ফাটা রোধে করণীয়

>> লিচু গাছে বছরে তিন কিস্তিতে অর্থাৎ বর্ষার শুরুতে, বর্ষার শেষে ও শেষ কিস্তি গাছে ফুল আসার পর বয়স অনুসারে পরিমাণ মতো জৈব ও রাসায়নিক সার সুষমমাত্রায় দিতে হবে।

>> খরা মৌসুমে ফল ধরার পর থেকে ১০-১৫ দিন পর পর লিচু গাছে নিয়মিত সেচ দিতে হবে। সেচ দেওয়ার পর প্রয়োজনে গাছের গোঁড়ায় কচুরিপানা বা খড় দ্বারা আচ্ছাদনের ব্যবস্থা নিতে হবে।

>> প্রতি বছর গাছের গোঁড়ায় ক্যালসিয়াম সার (ডলোচুন ৫০ গ্রাম) প্রয়োগ করতে হবে।

>> ফল বৃদ্ধির সময় জিংক সালফেট ১০ গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ২১ দিন পর পর গাছে স্প্রে করতে হবে।

>> গুটি বাঁধার পরপরই প্লানোফিক্স বা মিরাকুলান প্রতি ৪.৫ লিটার পানিতে দুই মিলি হারে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।

>> বোরন সার ১০ লিটার পানিতে ৬০ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে। বোরিক এসিড বা সলুবোর বোরন ২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০-১২ দিন অন্তর অন্তর তিনবার গাছে স্প্রে করতে হবে।

>> ন্যাপথালিন এসিটিক এসিড ২৫ পিপিএম হারে এর সঙ্গে জিবারেলিক এসিড ৫০ পিপিএম হারে ১০ দিন পর পর স্প্রে করে ফাটা রোগ রোধ করা যেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *