বেগুনের ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা (বৈজ্ঞানিক নাম: Leucinodes orbonalis) বেগুন চাষের অন্যতম ক্ষতিকর পোকা। এটি গাছের কুঁড়ি, ডগা এবং ফলে ছিদ্র করে ক্ষতি করে, ফলে ফলন কমে যায় এবং বাজারমূল্যও নষ্ট হয়।
ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা বেগুনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এটি কম বয়সী ডগাকে আক্রমণ করে। আক্রান্ত ডগা তাজা ভাব হারাতে থাকে। আক্রান্ত ডগার আকার নষ্ট হয়ে যায়। এমনকি আক্রান্ত বেগুন রান্না করলে এর স্বাদ হয় তেতো। মারাত্মক আক্রমণের ফলে পুরো গাছটিই মরে যেতে পারে। বেগুন গাছ লাগানোর পর থেকে বেগুন তোলা পর্যন্ত ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকা গাছকে আক্রমণ করে। ডগা ও ফল ছিদ্রকারী পোকার বিভিন্ন স্থানীয় নাম রয়েছে। যেমন- আলমারা, ডগাভাঙা এবং ফল ছিদ্রকারী পোকা।
🐛 পোকা শনাক্ত করার উপায়:
-
ডগা ও কুঁড়ি কুঁচকে শুকিয়ে যায়।
-
ফলে ছোট ছিদ্র দেখা যায়, মাঝে মাঝে পোকা বা তার মল দেখা যায়।
-
ফল পচে যায় এবং ভেতরের অংশ নষ্ট হয়ে যায়।
⚠️ পোকা দমনের উপায়:
১. পরিচর্যা ও কৃষি ব্যবস্থা:
-
আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে পুড়িয়ে ফেলুন।
-
বিছানার মতো গাছগুলো ছাঁটাই করুন যাতে আলো-বাতাস চলাচল সহজ হয়।
-
পোকার বংশবৃদ্ধি রোধে ক্ষেত পরিচ্ছন্ন রাখুন।
২. আলো ফাঁদ ও ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার:
-
ফেরোমন ফাঁদ (brinjal shoot and fruit borer pheromone trap) প্রতি বিঘায় ৪-৫টি করে দিন।
-
রাতে আলো ফাঁদ বসিয়ে পোকা ধরতে পারেন।
৩. জৈব দমন পদ্ধতি:
-
নিম বীজের নির্যাস (৫%) স্প্রে করুন সপ্তাহে ১-২ বার।
-
ব্যাসিলাস থুরিঞ্জিয়েনসিস (Bt) ভিত্তিক জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যায়।
৪. রাসায়নিক দমন (শেষ বিকল্প হিসেবে):
-
খুব বেশি আক্রমণ হলে অনুমোদিত কীটনাশক যেমন:
-
সাইপারমেথ্রিন ১০ইসি @ ১ মি.লি./লিটার
-
থায়ামেথোক্সাম + ল্যাম্বডা-সাইহ্যালোথ্রিন মিশ্রণ
⚠️ সতর্কতা: ফল তোলার অন্তত ৭-১০ দিন আগে স্প্রে বন্ধ রাখতে হবে।
-
🛡️ প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো উপায়:
-
পোকা দমনের চেয়ে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা বেশি কার্যকর।
-
নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করুন।