ধানের ব্লাস্ট রোগের কারন- ছত্রাক
ধানের ব্লাস্ট রোগের জীবানুর বৈজ্ঞানিক নাম-Pyricularia oryzae
রোগ সংঘটিত হওয়ার স্থান- পাতা, কান্ড ও শীষ আক্রান্ত হয়। রোগের লক্ষণ-প্রথমে পাতায় ডিম্বাকৃতির দাগ পড়ে যার দু প্রান্ত লম্বা হয়ে চোখাকৃতি ধারণ করে। দাগের মধ্যভাগ ছাই রংয়ের ও বাইরের দিকের প্রান্ত গাঢ় বাদামী হয়। অনেকগুলি দাগ একত্রিত হলে পাতাটি মরে যেতে পারে।বীজ, বাতাস, কীচপতঙ্গ ও আবহাওয়া ইত্যাদি দ্ধারা ছড়ায়। রাতে ঠান্ডা, দিনে গরম এবং শিশির থাকলে এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়।
আক্রমণের আগে করণীয়:
- জমিতে সব সময় পানি ধরে রাখা;
- মাটি পরীক্ষা করে জমিতে সুষম সার প্রয়োগ করুন;
- মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন ;
- এ রোগের আশঙ্কা থাকলে জমিতে পটাশ সার দুইবারে প্রয়োগ করুন (জমি তৈরির সময় অর্ধেক ও চারা লাগানোর ১৫ দিন উইরিয়া উপরি প্রয়োগের সময় অর্ধেক
প্রতিকার-
- কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করে সেচ দেওয়া।
- বর্তমানে এমিস্টার টপ খুব কার্যকরী ঔষধ প্রতি লিটার পানিতে (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন: নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি @ ০.৬০ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা।
- অথবা প্রতি লিটার পানিতে ট্রাইসাইক্লাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন: ট্রুপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি ০.৮১ গ্রাম বা অন্যান্য নামের এ রোগের জন্য অনুমোদিত ছত্রাকনাশক অনুমোদিত মাত্রায় মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা।
- অথবা, হিনোসান/,ট্রুপার/,দিফা,/টাইনোভা স্প্রে করলে ভাল ফল পাওয়া যায়; এছাড়াও ব্লেকুইন / ডিপার/কমবি-২ /কারিশমা /এমিস্টার টপ /নটিভো / এমিস্কোর/কাসুমিন /এক্সট্রা কেয়ার /ইমিনেন্ট প্রো স্প্রে করা যায়;
*** তবে লেবেলের দেওয়ামাত্রা অনুযায়ী ভাল ভাবে স্প্রে করতে হবে ।
বিঃদ্রঃ উপরে উল্লেখিত যে কোন ১ টি ছত্রাকনাশকের সংগে কার্বান্ডাজিম গ্রুপের আরো একটি ছত্রাকনাশক ১লিটার পানির জন্য ১ গ্রাম ছত্রাকনাশক ভাল ভাবে গুলে দুপুর পর স্প্রে করতে হবে । এতে ফলাফল দ্রুত হবে ।
কার্বান্ডাজিম গ্রুপঃ গোল্ডাজিম/ গিলজিম/ এমকোজিম / নোইন / নিউজিম/ ইউনিজুম/বাভিষ্টিন/ ব্যান্ডাজিম +আরো অনেক ।
# রোগ দেখার ২/৩ দিনের মধ্যে স্প্রে করতে হবে এবং রোগের প্রকোপ বেশী হলে ৪/৫ দিন পর দ্বিতীয়বার স্প্রে করতে হবে।
# ধান কাটার পর শুকিয়ে নিয়ে নাড়া জমিতেই পুড়িয়ে ফেলুন।
লেখক: ডিপ্লোমা কৃষিবিদ সারোয়ার জাহান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা।