যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) কেমিকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জাবেদ হোসেন খান উদ্ভাবন করেছেন ন্যানো ইউরিয়া সার, যা বাংলাদেশের কৃষিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার দাবি, এই সারের ব্যবহার এক বিঘা জমিতে চাষের খরচ প্রায় ৮২ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনবে।
বর্তমানে এক বিঘা জমিতে ইউরিয়া সারের জন্য গড়ে খরচ পড়ে প্রায় ৪,২০০ টাকা (সরকারি ভর্তুকিসহ)। সেখানে ন্যানো ইউরিয়া ব্যবহার করলে খরচ হবে মাত্র ২৩০ টাকা। এটি স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে প্রয়োগযোগ্য এবং মাঠ পর্যায়ে এর সফল প্রয়োগ ইতোমধ্যেই নিশ্চিত হয়েছে।
ড. জাবেদ হোসেন খান বলেন, “সরকার ইউরিয়ার এক বস্তা আমদানি করে ৯০-৯২ ডলারে। ন্যানো ইউরিয়া প্রযুক্তি ব্যবহারে আমরা সেই খরচ অনেকাংশে কমিয়ে আনতে পারি। এটি শুধু সাশ্রয়ী নয়, পরিবেশবান্ধবও।”
গবেষক জানান, এই উদ্ভাবন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। আমেরিকান জৈব সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান কোলাবায়োর সঙ্গে প্রযুক্তি বিনিময় সংক্রান্ত চুক্তিও স্বাক্ষর হয়েছে। চুক্তির আওতায় কোলাবায়ো যবিপ্রবির ‘ন্যাম ল্যাব’ থেকে ন্যানো সারের প্রযুক্তি গ্রহণ করবে এবং তাদের নিজস্ব জৈবপ্রযুক্তিও ল্যাবটির সঙ্গে ভাগ করে নেবে।
তিনি আরও বলেন, “গত সাত বছর ধরে আমেরিকার বিভিন্ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে আমার উদ্ভাবন নিয়ে কাজ হচ্ছে। গবেষণা পত্রও প্রকাশিত হয়েছে, এবং তা আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত হয়েছে। এমনকি মিনেসোটার একটি প্রতিষ্ঠানও এই প্রযুক্তি নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উদ্ভাবনটি আমার নামে প্যাটেন্টকৃত।”
বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তাদের মতে, কৃষিতে ন্যানো প্রযুক্তির এই প্রয়োগ শুধু খরচ কমাবে না, বরং মাটির উর্বরতা রক্ষায়ও সহায়ক হবে। ফলে দেশের কৃষি খাতে এটি এক নতুন বিপ্লবের সূচনা করতে পারে।